ইসলামী ঐক্য আন্দোলন । নবুওয়াতি ধারার খেলাফতি আন্দোলন।

ফজলুল হক ইফতারির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ


ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, বগুড়ার কৃতী সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব ফজলুল হক ইফতারি গত ২৮শে জুলাই সন্ধ্যা :৩০ মিনিটে ইন্তেকাল করেন।ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাইহি রজিউন। মরহুমের ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করে ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমীর জনাব মাওঃ আব্দুল আজিজ, নায়েবে আমীর মাওলানা আজিজুল হক মুরাদ, সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মোহাম্মদ ইসমাঈল ফারুক এক যুক্ত শোকবাণী প্রদান করেন।

শোকবাণীতে তারা বলেন, জনাব ফজলুল হক ছিলেন স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন লড়াকু মুক্তিযোদ্ধা এবং ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠায় একজন অকুতোভয় বীর সৈনিক।তাঁর মৃত্যুতে আমরা একজন বীর যোদ্ধাকে হারালাম। জনাব ফজলুল হক ইসলামী আন্দোলনের প্রচার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা তাঁর সকল প্রচেষ্টাকে কবুল করে জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করুন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারকে ধৈর্যধারণ করার তাওফিক দান করুন।

Share:

ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের পটভূমি

বাংলাদেশ স্বাধীন হবার সময় থেকেই এখানে সকল ইসলামী দল নিষিদ্ধ হয়ে যায় এবং ধর্মের নামে দল গঠন ও রাজনীতির ওপর সাংবিধানিকভাবেই নিষেধাজ্ঞা আরোপ অরা হয়। ১৯৭৫-এর ৭ই নভেম্বরর পটপরিবর্তনের পর দেশে একটি নতুন পরিস্থিতি তৈরি হয়। এ পরিস্থিতিতে মাওলানা আব্দুর রহীম (রঃ) নতুন সরকারকে প্রভাবিত করে সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ বর্জন ও আল্লাহর ওপর ঈমান ও আস্থা সংযোজন এবং ইসলামী রাজনীতির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে বলিষ্ঠ ভুমিকা পালন করেন। অতঃপর ১৯৭৬ সালে রাজনৈতিক দল গঠনের ওপর থেকে বিধি নিষেধ প্রত্যাহার করা হলে হযরত মাওলানা আব্দুর রহীম (রঃ) সকল সাবেক ইসলামী দলের নেতা- কর্মীদের অভিন্ন প্লাটফরমে ঐক্যবদ্ধ করে একটিমাত্র ইসলামী দল গঠনের উদ্যোগ নেন। সাতটি সাবেক দলের নেতৃবৃন্দ এক ঐক্যের সনদে স্বাক্ষর করেন। এতে বলা হয়ঃ "আমরা অধুনালুপ্ত কতিপয় ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ আল্লাহ্‌কে হাজির নাযির জেনে অঙ্গীকার করছি যে, আমরা অতীতের পরিচিতি ভুলে গিয়ে সম্পুর্ন নতুন নামে একটি মাত্র ইসলামী দল গঠন করবো"সাবেক জামা’আতে ইসলামীর পক্ষ থেকে হযরত মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম (রঃ) ও হযরত মাওলানা এ কে এম ইউছুফ এতে স্বাক্ষর করেন। ১৯৭৬ সালের ২৪শে আগস্ট বাংলাদেশ ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগ (আইডিএল) নামে নতুন দল আত্নপ্রকাশ করে। সাবেক নেযামে ইসলাম পার্টির নেতা হযরত মাওলানা সিদ্দিক আহমদ (রঃ)কে দলের চেয়ারম্যান করা হয় এবং হযরত মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম (রঃ) হন সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান। ১৯৭৭-এর কাউন্সিল অধিবেশনে হযরত মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম (রঃ) দলের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

১৯৭৯-র প্রথমার্ধে আইডিএল থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ বেরিয়ে গিয়ে জামা’আতে ইসলামী নামে নতুন দল গঠন করে। কিন্তু ঐক্যের সনদে স্বাক্ষরের ভিত্তিতে গড়ে উঠা আইডিএল জনগনের সামনে ঘোষিত ঐক্যের অঙ্গীকার রক্ষা করার জন্যে স্বীয় কর্মতৎপরতা অব্যাহত রাখে।

পরবর্তীকালে হযরত মাওলানা মুহাম্মাদুল্লাহ্‌ হাফেজ্জী হুজুর (রঃ) রাজনৈতিক অঙ্গনে অবতীর্ন হলে হযরত মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম (রঃ) তাঁর সাথে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার পদক্ষেপ নেন এবং এতে সফল হন। আইডিএল সহ অনেকগুলো ইসলামী দল মিলে সম্মিলিত সংগ্রাম পরিষদ গঠন করে ইসলামী হুকুমাত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যে আন্দোলন গড়ে তোলে তা ঐ সময় বিরাট আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। বিভিন্ন কারনে ঐ আন্দোলনের পরিসমাপ্তি ঘটলে পরবর্তীকালে মাওলানা মরহুমেরই প্রচেষ্টায় ‘ইসলামী শাসন্তন্ত্র আন্দোলন’ নামে আরেকটি ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে উঠে। এ আন্দোলনও ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।(অবশ্য আরো পরে এ আন্দোলনেরও পরিসমাপ্তি ঘটে এবং একই নামে আরেকটি নতুন দল আত্মপ্রকাশ করে।)

Share:
Education/hot-posts

Blogroll

BTemplates.com